শনিবার, ২৬ জুন, ২০১০

বাঙলাদেশে মেহনতী মানুষের প্রধান শত্রু কোনটি ? বাঙলাদেশের পুঁজিবাদ ? নাকি বিদেশী সাম্রাজ্যবাদ

বাঙলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ তত্ত্বগত সমস্যাটি এখন সুস্পষ্ট। তাহলো বাঙলাদেশের শ্রমিকশ্রেণীর মেহনতী মানুষের প্রধান শত্রু প্রধান সমস্যা কোনটি? বাঙলাদেশের পুঁজিবাদ নাকি বিদেশী সাম্রাজ্যবাদ। বাঙলাদেশের বুর্জোয়া রাষ্ট্র (শাসক বুর্জোয়া ও সরকার) নাকি বিদেশী সাম্রাজ্যবাদী বুর্জোয়া রাষ্ট্রগুলি।

বাঙলাদেশের মেহনতী মানুষের প্রধান শত্রু (বাঙলাদেশের পুঁজিবাদ নাকি বিদেশী সাম্রাজ্যবাদ) নির্ধারণ বিষয়ক তত্ত্বগত সমস্যাটির যথাযথ সমাধান না হওয়ার কারণে বাঙলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলন বিভক্ত ও অসংগঠিত। বাঙলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলন এখনও জাতীয় পর্যায়ে সংগঠিত ও শক্তিশালী নয়।

পাকিস্তান আমলে পূর্ববাঙলার জনগণের পাকিস্তানের জনগণেরও প্রধান শত্রু (পাকিস্তানের পুঁজিবাদ নাকি বিদেশী সাম্রাজ্যবাদ) নির্ধারণ বিষয়ক তত্ত্বগত সমস্যাটির সঠিক সমাধান না হওয়ার কারণে পূর্ববাঙলার কমিউনিস্ট আন্দোলন ছিল বিভক্ত ও অসংগঠিত। পূর্ববাঙলার কমিউনিস্টরা একাত্তর সালে বাঙলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধে যথাযথ ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছেন ।

ষাট দশকে সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ক বিভ্রান্তিমূলক আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট বিতর্ক পূর্ববাঙলার কমিউিনিস্ট আন্দোলনের গুরুতর ক্ষতিসাধন করে। বাঙলাদেশের কমিউিনিস্ট আন্দোলনের বিভক্তি ও দূর্বলতার পেছনে ষাট দশকের সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট বিতর্কের বিভ্রান্তিগুলির প্রভাব অনেকটা দায়ী। বাঙলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনে এগুলির জের এখনও ক্রিয়াশীল।

সময় খুব বড় শিক্ষক। একাত্তর সাল বাঙলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলীরর মধ্য দিয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ তত্ত্বগত লাইনটি বাস্তবে প্রমানিত হয়েছে। তা হলো পাকিস্তান আমলে পূর্ববাঙলার জনগণের প্রধান শত্রু ছিল পকিস্তানের পুজিবাদ, পাকিস্তানের শাসক বুর্জোয়া, বুর্জোয়া রাষ্ট্র ও সরকার। পরোক্ষ সাম্রাজ্যবাদ, পরোক্ষ সাম্রাজ্যবাদী বুর্জোয়া রাষ্ট্রগুলি ছিল পূর্ববাঙলার জনগণের অন্যতম মূল শত্রু।

স্বাধীনতার পর সাতত্রিশ বছরে আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক একাধিক কারণে বাঙলাদেশে বুর্জোয়া সরকারগুলির পতন ও পরিবর্তনের ঘটনাবলীর মধ্য দিয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণর্ সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ তত্ত্বগত লাইনটি বাস্তবে প্রমানিত হয়েছে। তা হলো বাঙলাদেশের মেহনতী মানুষের (শ্রমিক ও কৃষক) প্রধান শত্রু হলো বাঙলাদেশের পুঁজিবাদ, বাঙলাদেশের শাসক বুর্জোয়া, বুর্জোয়া রাষ্ট্র ও সরকার। পরোক্ষ সাম্রাজ্যবাদ পরোক্ষ সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলি হলো বাঙলাদেশের মেহনতী মানুষের (নর নারী) অন্যতম মূল শত্রু।

বাঙলাদেশের অগ্রসর কমিউনিস্টদের কর্তব্য হলো বাঙলাদেশে পুঁজিবাদ উচেছদ ও সমাজতন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ক্রমশঃ সংগঠিত করা। বাঙলাদেশের প্রতিক্রিয়াশীল আমলাতান্ত্রিক বুর্জোয়া রাষ্ট্র ও সরকার উচেছদ এবং সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ক্রমশঃ সংগঠিত করা। বাঙলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনে বিদ্যমান সংস্কারবাদী ধারা ও নৈরাজ্যবাদী ধারার পতন অনিবার্য এবং সুসঙ্গত বিপ্লবী কমিউনিস্ট ধারার বিজয় অনিবার্য।


তারিখঃ ০১.০৪.২০০৮

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন