শুক্রবার, ১৬ জুলাই, ২০১০

বাঙলাদেশে নারী মুক্তির পথ ও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম

বাঙলাদেশের সমাজ পুঁজিবাদী। এখানে নারীরা পুঁজিবাদী শোষণের ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় দ্বিগুণ বেশী শোষিত। যেখানে পুঁজিবাদী শোষণ থাকে বা মজুরী দাসত্ব থাকে সেখানে নারী নির্যাতন অনিবার্য। এমনকি এখানে গণিকাবৃত্তিও অনিবার্য। আরও মুনাফা আরও লাভের জন্য বুর্জোয়ারা নারীদের দেহব্যবসায় উৎসাহ যোগায়।

বাঙলাদেশের সমাজে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার সীমিত। অপরদিকে বাঙলাদেশের সমাজে সকল ক্ষেত্রে পুরুষেরা বিশেষ অধিকারপ্রাপ্ত। যেখানে পুঁজিবাদ, পুঁজিপতি ও বণিক থাকে সেখানে পুরুষের সঙ্গে নারীর সমতা প্রতিষ্ঠা হতে পারে না। এমনকি আইনের ক্ষেত্রেও তা হতে পারে না। আইনের সমতার মানে জীবনের ক্ষেত্রে সমতা নয়।

বাঙলাদেশের পুঁজিবাদী সমাজে নারী মুক্তির মূল পথ ভূমি ও শিল্পে বাক্তিমালিকানার উচেছদ এবং ব্যাংক, বীমা, ব্যবসা বাণিজ্য জাতীয়করণ। দেশে কৃষিতে ব্যাপক যৌথ উৎপাদনের প্রবর্তন। সারাদেশে ব্যাপক মেহনতী নারীকে যৌথ উৎপাদনে টেনে আনা। নারীকে তার অতি সাধারণ কাজের সাংসারিক বৃত্ত থেকে বাহিরে টেনে আনার জন্য বহুসংখ্যক সামাজিক ভোজনালয়, শিশু লালনাগার ও কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠা করা। এবং দেশের সকল নর নারী চাকুরীর নিশ্চয়তা প্রদান করা এবং অফিসারের বেতন ও শ্রমিকের বেতন সমান সমান করা।

বাঙলাদেশের পুজিবাদী সমাজে নারী মুক্তির মূল পথ ব্যাপক নারীকে মেহনতী নারীকে অগ্রসর কমিউনিস্ট রাজনীতির মধ্যে টেনে আনা। অগ্রসর কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে পরিচালিত ট্রেড ইউনিয়ন ও ক্ষেতমজুর ইউনিয়নে ব্যাপক মেহনতী নারীকে সক্রিয় করে তোলা। অগ্রসর কমিউনিস্ট রাজনীতিকে ব্যাপক মেহনতী নারীর আয়ত্ত্বাধীন করা।

পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অর্থনৈতিক ভিত্তি ব্যক্তিগত মালিকানা। পুঁজিবাদী সমাজে ব্যক্তিগত মালিকানার সঙ্গে আত্মদম্ভরিতা, পুরুষতন্ত্র ও প্রতিক্রিয়াশীল ধর্মীয় চেতনা বিশেষভাবে সম্পর্কিত।

পুঁজিবাদ উচেছদ ছাড়া নারী মুক্তি সম্ভব নয়। বুর্জোয়া রাষ্ট্র ও সরকার উচেছদ ছাড়া নারী মুক্তি হতে পারে না। এক কথায় বাঙলাদেশের পুঁজিবাদী সমাজে নারী মুক্তির মূল পথ পুঁজিবাদের উচ্ছেদ ও সমাজতন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। বুর্জোয়া রাষ্ট্র ও সরকার উচেছদ এবং সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। একই সঙ্গে নারী মুক্তির ক্ষেত্রে বিশেষ সমস্যা ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ উচ্ছেদের সংগ্রাম।

বাঙলাদেশে সমাজতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নারী মুক্তির প্রক্রিয়াকে পরিপূর্ণতার দিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব। তবে পরিপূর্ণ নারী মুক্তি অর্জিত হওয়া সম্ভব কেবল পরিপূর্ণ কমিউনিজম প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে।

তারিখঃ ২৪.০৬.২০১০

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন