সোমবার, ৩০ আগস্ট, ২০১০

বাঙলাদেশে কমিউনিস্ট রাজনৈতিক সংগ্রামের মূল সমস্যা




সাধারণভাবে শ্রমিকশ্রেণীর বিপ্লবী ভাবাদর্শ মার্কসবাদ-লেনিনবাদ সুনির্দিষ্টভাবে শ্রমিকশ্রেণীর বিপ্লবী ভাবাদর্শকমিউনিস্ট ভাবাদর্শ শ্রমিকশ্রেণীর বিপ্লবী রাজনৈতিক সংগ্রাম কমিউনিস্ট রাজনৈতিক সংগ্রাম কমিউনিস্ট সংগ্রামেরঅর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক) প্রধান রূপ রাজনৈতিক সংগ্রাম (



দুঃখজনক হলেও সত্য বাঙলাদেশে শ্রমিকশ্রেণীর রাজনৈতিক সংগ্রাম গুণগতভাবে বিকশিত নয় দেশে কমিউনিস্ট রাজনৈতিকসংগ্রাম জাতীয় পর্যায়ে শক্তিশালী প্রভাবশালী নয় বরং এদেশে কমিউনিস্ট রাজনৈতিক সংগ্রাম বিভক্ত দুর্বল এক্ষেত্রেরাজনৈতিক সংগ্রাম বিষয়ক তত্ত্বগত সমস্যাই প্রধানতঃ দায়ী



আমাদের মতে প্রথমতঃ রাজনৈতিক সংগ্রামের গুরুত্ব তাৎপর্য বোঝার অক্ষমতার কারণে বাঙলাদেশে কমিউনিস্টরাজনৈতিক সংগ্রাম যথাযথভাবে সংগঠিত করা সম্ভব হয়নি তত্ত্বগত বিচারে একটি দেশে শ্রেণীবিভক্ত সমাজে রাজনৈতিকসংগ্রাম রাষ্ট্র সরকারের রাজনৈতিক শোষণ নির্যাতন বিরোধী সংগ্রাম রাজনৈতিক সংগ্রাম রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের সংগ্রাম বাবিকল্প রাষ্ট্র সরকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অবজেকটিভ কারণে শ্রেণীবিভক্ত সমাজে রাজনৈতিক শ্রেণীশোষণ প্রধান এবংরাজনৈতিক শ্রেণীসংগ্রাম প্রধান তাই শ্রেণীবিভক্ত সমাজে শ্রমিকশ্রেণীর প্রধান সংগ্রাম কমিউনিস্টদের প্রধান সংগ্রামরাজনৈতিক সংগ্রাম শ্রেণীবিভক্ত সমাজে গণসংগ্রাম, গণজাগরণ গণঅভু্যত্থানের একটি প্রধান শর্ত রাজনৈতিক সংগ্রাম



শ্রেণীবিভক্ত সমাজে কমিউনিস্ট রাজনৈতিক সংগ্রাম নির্ধারিত হয় বিদ্যমান রাষ্ট্র সরকারের শ্রেণীচরিত্রের গুণগত বিপরীতশ্রেণীগত অবস্থানের ভিত্তিতে যেমন একটি সামন্ততান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্ধারিত হয় নয়া গণতান্ত্রিক বা জনগণতান্ত্রিক রাজনৈতিকসংগ্রাম একটি বুর্জোয়া রাষ্ট্রে নির্ধারিত হয় সমাজতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগ্রাম



সঙ্গত কারণেই কেবল সঠিক কমিউনিস্ট রাজনৈতিক কর্মসূচীর ভিত্তিতে সঠিক, ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী কমিউনিস্টরাজনৈতিক সংগ্রাম গড়ে তোলা সম্ভব বাঙলাদেশে সঠিক কমিউনিস্ট রাজনৈতিক কর্মসূচী প্রণয়ন করা সম্ভব প্রধানতঃমার্কসবাদ-লেনিনবাদের তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশের আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ মূল্যায়নের মাধ্যমেবিশেষতঃ সঙ্গতিশীল সৃজনশীল অনুশীলনের মাধ্যমে

একথা সত্য ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে পূর্ববাঙলার কমিউনিস্টদের এবং মাওলানা ভাসানীর প্রাধান্যমূলক নেতৃত্ব ছিলনাকারণ ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত করার ক্ষেত্রে পূর্ববাঙলার কমিউনিস্টদের প্রধান অংশের সঠিক কমিউনিস্টরাজনৈতিক কর্মসূচীর উপস্থিতি ছিলনা আসলে পূর্ববাঙলায় ঊনসত্তরের গণঅভু্যত্থানে শেখ মুজিবুর আওয়ামী লীগেরপ্রধান্যমূলক নেতৃত্ব কার্যকর ছিল কারণ ঊনসত্তরের গণঅভু্যত্থান গড়ে উঠার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ শেখ মুজিবুরের সঙ্গতিপর্ণ বুর্জোয়া-পেটিবুর্জোয়া কর্মস চী দফা ১১ দফা ক্রিয়াশীল ছিল বাস্তবে প্রধানতঃ দফা ১১ দফার ভিত্তিতে ঊনসত্তরেরগণঅভু্যত্থান (বুর্জোয়া-পেটি বুর্জোয়শ্রেণীর প্রাধান্য ভিত্তিক অভ্যুত্থান) সংঘটিত হয়



ক্ষমতাসীন সরকারের গুরুত্ব তাৎপর্য বোঝার অভাবে বাঙলাদেশে কমিউনিস্ট রাজনৈতিক সংগ্রাম সঠিকভাবে গড়েতোলা সম্ভব হয়নি তত্ত্বগত বিচারে শাসকশ্রেণী রাষ্ট্রের মূর্ত রূপ সরকার একটি দেশে শ্রেণীবিভক্ত সমাজে সরকারই প্রধানউৎপীড়ক যন্ত্র কর্তৃত্বশালী সংস্থা শাসকশ্রেণীর সংগঠিত পরিচালনা কমিটি সরকার সরকার শাসকশ্রেণীর অর্থনৈতিক রাজনৈতিক পরাক্রমশালী অংশ রাষ্ট্র শ্রেণী প্রভুত্বের সংস্থা শ্রেণী আধিপত্যের হাতিয়ার রাষ্ট্র সংস্থার সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অঙ্গসরকার সামরিক রাষ্ট্রেরও সরকার থাকে সাধারণতঃ সরকারই সেনাবাহিনী, ব্যাংক বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করেঅপরদিকে ব্যবহারিক দিক থেকে সরকারই সেনাবাহিনী, পুলিশ, ব্যাংক, বিচারক, আমলা মিডিয়া শেষ পর্যন্ত সরকারইরাষ্ট্র, রাষ্ট্রই সরকার



একটি দেশে শ্রেণীবিভক্ত সমাজে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বা সরকারী রাজনৈতিক দল সবচেয়ে বড় শোষক নির্যাতনকারী কারণ সরকারী রাজনৈতিক দলই সরকার গঠন করে শ্রেণীবিভক্ত সমাজে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিররাজনৈতিক ক্ষমতা তুলনা্মূলকভাবে সীমিত, অর্থনৈতিক শোষণও তুলনাম লকভাবে সীমিত প্রত্যেক দেশে শ্রেণীবিভক্ত সমাজেসুনির্দিষ্ট অর্থে শ্রমিকশ্রেণীর প্রধান শত্রু সরকার সরকারী রাজনৈতিক দল



অর্থনৈতিক সংগ্রাম রাজনৈতিক সংগ্রামের ঐক্য পার্থক্য সঠিকভাবে বোঝার অক্ষমতার কারণে বাঙলাদেশে কমিউনিস্টরাজনৈতিক সংগ্রাম যথাযথভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি তত্ত্বগত বিচারে অর্থনৈতিক উৎপাদন ব্যবস্থা বা বৈষয়িক কর্মকান্ডইরাজনীতির মূল ভিত্তি সমাজ জীবনে অর্থনীতি মূল কাঠামো রাজনীতি উপরিকাঠামো কিন্তু অর্থনৈতিক সংগ্রাম রাজনৈতিকসংগ্রামের মূল ভিত্তি নয়



অর্থনৈতিক সংগ্রাম গড়ে ওঠে প্রধানতঃ অর্থনৈতিক কর্মসূচীর ভিত্তিতে অপরদিকে রাজনৈতিক সংগ্রাম প্রধানতঃ রাজনৈতিককর্মসূচীর ভিত্তিতে গড়ে ওঠে অর্থনৈতিক সংগ্রাম রাজনৈতিক সংগ্রামের ক্ষেত্র ভিন্ন ভিন্ন অর্থনৈতিক সংগ্রামের ক্ষেত্র সীমিতঅপরদিকে রাজনৈতিক সংগ্রামের ক্ষেত্র ব্যাপক বিস্তৃত

অর্থনৈতিক সংগ্রাম, রাজনৈতিক সংগ্রাম সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগ্রাম পরসপরকে বিকশিত করে শক্তিশালী করে সঠিকরাজনৈতিক সংগ্রামের প্রাধান্যে এই তিন রকম সংগ্রাম একটি অবিচেছদ্য অখন্ড সংগ্রামে পরিণত হয় এইরূপ অবিচ্ছেদ্য অখন্ডসংগ্রাম ছাড়া শ্রমিকশ্রেণীর মুক্তিসংগ্রাম জয়যুক্ত হওয়া সম্ভব নয়

অর্থনৈতিক সংগ্রাম কখনও রাজনৈতিক সংগ্রামে পরিণত হয়না অর্থনৈতিক সংগ্রামের মধ্যে বিকশিত স্ফুলিঙ্গ স্বরূপ সীমিতরাজনৈতিক সংগ্রামই কেবল পাশাপাশি ক্রিয়াশীল সঠিক মূল রাজনৈতিক সংগ্রামে (কমিউনিস্ট রাজনৈতিক সংগ্রাম) উন্নীত হয়

সমস রাজনৈতিক সংগ্রামই শ্রেণীসংগ্রাম প্রতিক্রিয়াশীল শাসকশ্রেণীর বিরুদ্ধে নিপীড়িত শ্রেণীসমূহের সংগ্রাম অনিবার্যভাবেপ্রধানতঃ রাজনৈতিক আসলে শ্রমিকশ্রেণীর শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষের সামগ্রিক মুক্তিসংগ্রামের প্রধান দিক রাজনৈতিকশ্রেণীসংগ্রাম কিন্তু সমস্ত মুক্তিকামী শ্রেণীসংগ্রাম শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক মুক্তির প্রশ্নে আবর্তিত বাস্তব কারণে শেষ পর্যন্তশ্রমিকশ্রেণীর সর্বাঙ্গীন মুক্তি অর্থনৈতিক মুক্তিই কেন্দ্রীয় প্রশ্ন



প্রত্যক্ষ সাম্রাজ্যবাদ পরোক্ষ সাম্রাজ্যবাদের পার্থক্য সঠিকভাবে বোঝার অভাবে বাঙলাদেশে কমিউনিস্ট রাজনৈতিকসংগ্রাম যথাযথভাবে সংগঠিত করা সম্ভব হয়নি তত্ত্বগত বিচারে আধুনিক সাম্রাজ্যবাদ একচেটিয়া পুঁজিবাদ আধুনিকসাম্রাজ্যবাদ পুঁজিবাদের সর্বোচ্চ পর্যায় আধুনিক সাম্রাজ্যবাদের রয়েছে দুটি পর্যায় যেমন প্রত্যক্ষ সাম্রাজ্যবাদের যুগ পরোক্ষসাম্রাজ্যবাদের যুগ

প্রত্যক্ষ সাম্রাজ্যবাদের যুগে পৃথিবীর বেশীরভাগ দেশ সাম্রাজ্যবাদের পরাধীন দখলকৃত দেশে সাম্রাজ্যবাদী বুর্জোয়ারা নিজেরাইশাসকশ্রেণীতে পরিণত হয় এবং নিজেদের সরকার গঠন করে পরোক্ষ সাম্রাজ্যবাদের যুগে পৃথিবীর বেশীরভাগ দেশ স্বাধীনদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন বুর্জোয়া রাষ্ট্রগুলির সৃষ্টির পর পরোক্ষ সাম্রাজ্যবাদের যুগের উদ্ভব হয় পরোক্ষসাম্রাজ্যবাদের যুগে কোন দেশে (ইরাক আফগানিস্তান ছাড়া) সাম্রাজ্যবাদী বুর্জোয়ারা ক্ষমতাসীন সরকার নয়

প্রত্যক্ষ সাম্রাজ্যবাদের যুগে পরাধীন দেশে সাম্রাজ্যবাদী বুর্জোয়ারা নিজেরাই সরাসরি লগ্নি পুঁজি বিনিয়োগ করতো সেই যুগেদেশীয় বুর্জোয়া দেশীয় পুঁজি ছিল মূলতঃ পরাধীন পরোক্ষ সাম্রাজ্যবাদের যুগে স্বাধীন দেশে সাম্রাজ্যবাদী বুর্জোয়ারা প্রধানতঃবন্ধুত্ব চুক্তির মাধ্যমে লগ্নি পুঁজি বিনিয়োগ করে এই যুগে দেশীয় বুর্জোয়া দেশীয় পুঁজি স্বাধীন

সরকার বিরোধী সংগ্রাম রাজনৈতিক সংগ্রাম মালিক বিরোধী সংগ্রাম বা কোম্পানী বিরোধী সংগ্রাম অর্থনৈতিক সংগ্রামপ্রত্যক্ষ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম মূলতঃ রাজনৈতিক পরোক্ষ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম মূলতঃ অর্থনৈতিক বৃটিশ আমলেপরাধীন ভারতে প্রত্যক্ষ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম ছিল প্রধানতঃ রাজনৈতিক বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদী বুর্জোয়ারা ছিল পরাধীনভারতের ক্ষমতাসীন সরকার স্বাধীনতা উত্তর ভারতে পরোক্ষ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম প্রধানতঃ অর্থনৈতিক স্বাধীনতাউত্তর ভারতের বুর্জোয়ারাই ভারতের ক্ষমতাসীন সরকার



বুর্জোয়া নির্বাচন বুর্জোয়া পার্লামেন্টের গুরুত্ব তাৎপর্য বোঝার অক্ষমতার কারণে বাঙলাদেশে কমিউনিস্ট রাজনৈতিকসংগ্রাম গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি তত্ত্বগত বিচারে একটি দেশে শ্রেণীবিভক্ত সমাজে শ্রমিকশ্রেণীকে শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষকেসচেতন সংগঠিত করার ক্ষেত্রে সাধারণতঃ বুর্জোয়া নির্বাচন বুর্জোয়া পার্লামেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে

সঠিক কমিউনিস্ট কর্মসূচী ব্যতীত বিশেষতঃ কমিউনিস্ট রাজনৈতিক কর্মসূচী ব্যতীত বুর্জোয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পথসংস্কারবাদী পথ শ্রেণীসমন্বয়মূলক পথ অপরদিকে সপষ্টতইঃ বিপ্লবী রাজনীতির উপস্থিতি নেই এরকম সময়ে বুর্জোয়া নির্বাচন বুর্জোয়া পার্লামেন্ট বর্জনের কারণে বিপ্লবী রাজনীতি সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে দেশে শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষের বিকল্পসোভিয়েত গড়ে তোলার আগে বুর্জোয়া নির্বাচন বুর্জোয়া পার্লামেন্ট বর্জন করার পথ নৈরাজ্যবাদী পথ



ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম বাঙলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের গুরুত্ব তাৎপর্য বোঝার অক্ষমতার কারণে বাঙলাদেশেকমিউনিস্ট রাজনৈতিক সংগ্রাম যথাযথভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি তত্ত্বগত বিচারে জাতিগত নিপীড়ন (যথাক্রমে বহিস্থঃ আভ্যন্তরীন) বিরোধী ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম বাঙলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ মূলতঃ ন্যায়সঙ্গত প্রগতিশীল

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ছিল শ্রেণীগত দুটি মূল ধারা যেমন বুর্জোয়া ধারা কমিউনিস্ট ধারা ভারতের বুর্জোয়াদেরজাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ধারা (গান্ধী কংগ্রেস) এবং কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে ভারতের মেহনতী জনগণের শ্রেণীগত প্রাধান্যভিত্তিক জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ধারা বুর্জোয়া ধারাটি ছিল সঙ্গতিপূর্ণ বুর্জোয়া রাজনৈতিক কর্মসূচীর ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী অপরদিকে কমিউনিস্ট ধারাটি ছিল তত্ত্বগত সমস্যার কারণে অনেকটা বিভক্ত দুর্বল

বাঙলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের (মুক্তিযুদ্ধ) ছিল শ্রেণীগত দুটি মূল ধারা যেমন বুর্জোয়া ধারা কমিউনিস্ট ধারা পূর্ববাঙলারবাঙালী বুর্জোয়াদের জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ধারা (শেখ মুজিবুর আওয়ামী লীগ) এবং কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে পূর্ববাঙলারমেহনতী জনগণের শ্রেণীগত প্রাধান্য ভিত্তিক জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ধারা (মাওলানা ভাসানী কমিউনিস্ট সংগঠনগুলি)বুর্জোয়া ধারাটি ছিল সঙ্গতিপ র্ণ বুর্জোয়া রাজনৈতিক কর্মস চীর ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী অপরদিকে কমিউনিস্ট ধারাটিছিল তত্ত্বগত সমস্যার কারণে অনেকটা বিভক্ত দুর্বল



পন্থী রাজনীতির (মস্কোপন্থী পিকিংপন্থী) গুরুতর ক্ষতি বোঝার অক্ষমতার কারণে বাঙলাদেশে কমিউনিস্ট রাজনৈতিকসংগ্রাম যথাযথভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি তত্ত্বগত বিচারে কমিউনিস্ট আন্দোলনে পন্থী রাজনীতি বলতে বিচারমূলকসমালোচনা ছাড়া আন্তর্জাতিক কোন কমিউনিস্ট তত্ত্বগত লাইন অন্ধভাবে অনুসরণ করাকে বোঝায় কমিউনিস্ট আন্দোলনেএরকম পন্থী রাজনীতি সবচেয়ে পশ্চাদপদ সংস্কারবাদ নৈরাজ্যবাদ

পন্থী রাজনীতির দ্বারা আক্রান্ত ভারতের কমিউনিস্টদের একটি বড় অংশ বেসামরিক স্বৈরাচারী ইন্দিরা সরকারকে সমর্থনকরেছে পন্থী রাজনীতির দ্বারা আক্রান্ত পূর্ববাঙলার কমিউনিস্টদের একটি বড় অংশ সামরিক স্বৈরাচারী আইউব সরকারকেসমর্থন করেছে

পন্থী রাজনীতির কারণে পূর্ববাঙলার কমিউনিস্টদের একটি বড় অংশ সঠিক কমিউনিস্ট রাজনৈতিক কর্মসূচী ছাড়া বুর্জোয়ানির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে পূর্ববাঙলার কমিউনিস্টদের অপর একটি অংশ বিপ্লবী রাজনীতির বিকাশের আশায় স্থায়ীভাবেবুর্জোয়া নির্বাচন বর্জন করেছে পন্থী রাজনীতির কারণে পূর্ববাঙলার কমিউনিস্টদের একটি বড় অংশ বাঙালী বুর্জোয়াজাতীয়তাবাদী ধারার সহযোগী হিসাবে বাঙলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে পন্থী রাজনীতির কারণে পূর্ববাঙলারকমিউনিস্টদের অপর একটি বড় অংশ একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছে



১০ আমাদের মতে তত্ত্বগত সমস্যার কারণে প্রকৃতপক্ষে ভারত, পাকিস্তান শ্রীলংকার কমিউনিস্ট রাজনৈতিক সংগ্রামবিকশিত নয় উপমহাদেশে এই তিনটি দেশেও কমিউনিস্ট রাজনৈতিক সংগ্রাম জাতীয় পর্যায়ে শক্তিশালী প্রভাবশালী নয়বরং তত্ত্বগত সমস্যার কারণে এসকল দেশে কমিউনিস্ট রাজনৈতিক সংগ্রাম অনেকটা বিভক্ত দুর্বল

তবে নেপালের ক্ষেত্রে আমরা ব্যতিক্রম ঘটনা দেখতে পাই সামপ্রতিককালে নেপালে কমিউনিস্টদের (প্রচন্ড-বাবুরাম) রাজনৈতিক সংগ্রাম বিকশিত এবং জাতীয় পর্যায়ে শক্তিশালী প্রভাবশালী ১৯৭১ সালে পূর্ববাঙলা শ্রীলংকায় এবং ১৯৭২সালে বাঙলাদেশেও এক্ষেত্রে আমরা ব্যতিক্রম ঘটনা (সীমাবদ্ধতাসহ) দেখতে পাই ১৯৭১ সালে শ্রীলংকায় নানারকমসীমাবদ্ধতাসহ কমিউনিস্টদের (বিজয় রোহানা বীর) পূর্ববাঙলায় নানারকম সীমাবদ্ধতাসহ কমিউনিস্টদের (সিরাজসিকদার, দেবেন সিকদার আবুল বাশার) এবং ১৯৭২ সালে বাঙলাদেশে নানারকম সীমাবদ্ধতাসহ কমিউনিস্টদের (ডঃআখলাকুর রহমান সিরাজুল আলম খান) রাজনৈতিক সংগ্রাম কমবেশী বিকশিত ছিল এবং জাতীয় পর্যায়ে অল্প বিস্তরশক্তিশালী প্রভাবশালী ছিল



১১ আসলে একটি দেশে শ্রেণীবিভক্ত সমাজে কমিউনিস্টদের রাজনৈতিক কর্মসূচী প্রণয়ন এবং এর ভিত্তিতে রাজনৈতিক সংগ্রামগড়ে তোলার বিষয়টি শেষ পর্যন্ত দেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ মূল্যায়নের বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কিতবিশেষতঃ তা দেশের রাষ্ট্র সরকারে শ্রেণীচরিত্র নির্ধারণ, সমাজের উৎপাদন পদ্ধতির শ্রেণীচরিত্র নির্ধারণ সমাজের বুর্জোয়াগণতান্ত্রিক পরিবর্তনের মাত্রা নির্ধারণের বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কিত

অর্থনৈতিক গতির বিকাশের নিয়মে একটি সামন্ততান্ত্রিক রাষ্ট্রে পুঁজিবাদের বিকাশ অনিবার্য একটি বুর্জোয়া রাষ্ট্রে সামন্তবাদেরবিলোপ অনিবার্য শ্রেণীস্বার্থের কারণে সাম্রাজ্যবাদ পরাধীন দেশেও পুঁজিবাদকে বিকশিত করে সাম্রাজ্যবাদ নিজেদেরশ্রেণীস্বার্থের কারণে স্বাধীন দেশে পুঁজিবাদকে বিকশিত করতে বাধ্য হয় স্বাধীনতা উত্তর ভারত পাকিস্তানে পুঁজিবাদের বিশেষমাত্রায় বিকাশই তার প্রমান বিশেষতঃ পাকিস্তান আমলে পূর্ববাঙলায় আদমজী পাটকল স্থাপন এক্ষেত্রে একটি বড় দৃষ্টান অবজেকটিভ কারণেই বাঙলাদেশে পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটেছে অনিবার্যভাবে এক অর্থে মোগল আমলে ভারতের পণ্য অর্থনীতি, বৃটিশ আমলে ভারতের পুঁজিবাদী অর্থনীতি পাকিস্তান আমলে পূর্ববাঙলার পুঁজিবাদী অর্থনীতির ধারাবাহিক বিকাশেরফলশ্রুতি বাঙলাদেশের পুঁজিবাদ

বাঙলাদেশে উৎপাদনের উপকরণের মালিক দেশীয় পুঁজিপতিরা দেশীয় পুঁজিপতিরা লক্ষ লক্ষ মজুরী শ্রম নিয়োগ করেবাঙলাদেশে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বেঁচে থাকার জন্য নিজেদের শ্রমশক্তি বিক্রি করে বাঙলাদেশে মানুষের শ্রমশক্তিই পণ্যে পরিণতহয়েছে অনেক আগেই বাঙলাদেশের উৎপাদন ব্যবস্থায় রয়েছে পণ্য উৎপাদনের প্রধান্য বাঙলাদেশের বাজার ব্যবস্থায় বিদেশীপণ্যের তুলনায় দেশীয় পণ্যের পরিমাণ অনেকগুণ বেশী বাঙলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় শোষণের দিক প্রধান লুটতরাজেরদিক গৌণ

বাঙলাদেশে পুঁজিবাদ প্রতিযোগিতামূলক বাঙলাদেশে পুঁজিবাদের অবাধ প্রতিযোগিতা ক্রমশঃ একচেটিয়ায় পরিণত হচ্ছেবাঙলাদেশে দেশীয় পুঁজি দেশীয় বুর্জোয়ারা স্বাধীন বাঙলাদেশে বুর্জোয়াশ্রেণী শ্রমিকশ্রেণী পুঁজিবাদ সৃষ্টি করেনি বরংবাঙলাদেশে পুঁজিবাদই বুর্জোয়াশ্রেণী শ্রমিকশ্রেণী সৃষ্টি করেছে

পরোক্ষ সাম্রাজ্যবাদের যুগে লগ্নি পুঁজির কারণে কোন দেশ পরাধীন নয় ইরাক আফগানিস্তান পরাধীন, কেবল সাম্রাজ্যবাদীসেনাবাহিনী কর্তৃক দখলকৃত হওয়ার কারণে সাম্রাজ্যবাদ বাঙলাদেশে পুঁজিবাদের বিকাশ রুদ্ধ করতে পারবে না বাঙলাদেশেপুঁজিবাদ সাম্রাজ্যবাদ সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ বন্ধ করতে পারবে না



১২ একাত্তরের জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের সামরিক বুর্জোয়া রাষ্ট্র সরকারের উচ্ছেদ ঘটেপূর্ববাঙলার বাঙালী বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদীদের প্রধান অংশ (শেখ মুজিবুর আওয়ামী লীগ) কর্তৃক বাঙলাদেশে বুর্জোয়া রাষ্ট্র সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় শ্রেণীচরিত্রের কারণে শ্রেণীস্বার্থের কারণে ক্ষমতাসীন বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদীরা স্বৈরাচারে পরিণত হয়

বিগত আটত্রিশ বছরে বাঙলাদেশের সামরিক বেসামরিক বুর্জোয়া রাষ্ট্র সরকারগুলি কর্তৃক দেশের শ্রমিক কৃষক মেহনতীনরনারী সবচেয়ে বেশী শোষিত নির্যাতিত একই সঙ্গে বাঙলাদেশের মেহনতী জনগণ সাম্রাজ্যবাদ ধর্মীয় মৌলবাদ কর্তৃকবিশেষভাবে শোষিত নির্যাতিত শ্রেণীচরিত্রের কারণে শ্রেণীস্বার্থের কারণে বাঙলাদেশের বুর্জোয়া রাষ্ট্র সরকারগুলিসাম্রাজ্যবাদ ধর্মীয় মৌলবাদের স্বার্থরক্ষক এদেশেরর বুর্জোয়া রাষ্ট্র সরকারগুলি মূলতঃ সাম্রাজ্যবাদের বন্ধু সহযোগী

বাঙলাদেশের বুর্জোয়া রাষ্ট্র সরকারগুলি সংগঠিত, শক্তিশালী, প্রবল স্বৈরাচারী এই বুর্জোয়া রাষ্ট্র সরকারগুলি কখনওনিরাকার, আধা নিরাকার, দুর্বল অকার্যকর ছিলনা, এখনও তা নয় এদেশের রাষ্ট্র সরকারগুলি কর্তৃক শোষিত নির্যাতিত এদেশের মেহনতী নরনারী জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে তা উপলব্ধি করে যদিও বাঙলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনেরপ্রধান অংশ তা উপলব্ধি করেনা



১৩ বাঙলাদেশ রাজনৈতিকভাবে একটি স্বাধীন বুর্জোয়া রাষ্ট্র বাঙলাদেশে উৎপাদন ব্যবস্থা উৎপাদন পদ্ধতি পুঁজিবাদীবাঙলাদেশের শাসকশ্রেণী বুর্জোয়াশ্রেণী, সরকার বুর্জোয়া সরকার পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থা বুর্জোয়া রাষ্ট্র সরকারেরঅর্থনৈতিক ভিত্তি বুর্জোয়া রাষ্ট্র সরকার পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার রাজনৈতিক কতৃত্বশালী সংস্থা পরোক্ষ সাম্রাজ্যবাদেরতত্ত্ব বাস্তবতা এই সত্যই উপস্থিত করে আসলে পাকিস্তান আমলেই পূর্ববাঙলার উৎপাদন ব্যবস্থা ছিল পুঁজিবাদী ১৯৫০ সালেপূর্ববাঙলায় জমিদারী প্রথার উচ্ছেদ হয়েছে বাঙলাদেশে ইতিমধ্যেই দুটি পুঁজি বাজার রয়েছে বাঙলাদেশে কৃষি সংস্কারপ্রধানতঃ পরিসমাপ্ত গ্রামাঞ্চলে কৃষি সমস্যার প্রধান দিক ক্ষেত মজুরদের কাজ মজুরীর সমস্যা

বাঙলাদেশে শিল্প কৃষিতে ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠিত অনেক আগেই বাঙলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা, উচ্চ শিক্ষা, নারী শিক্ষা, সার্বজনীন ভোটাধিকার, নারীর ভোটাধিকার উচচ আদালত স্বীকৃত বাঙলাদেশের বুর্জোয়া রাষ্ট্র সরকারের নিজস্বসংবিধান সংসদ রয়েছে এবং নিজস্ব সেনাবাহিনী, স্ট্যাট ব্যাংক জাতিসংঘ সদস্যপদ রয়েছে

আমাদের মতে বাঙলাদেশে সমাজে বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক পরিবর্তন প্রধানতঃ পরিসমাপ্ত বাঙলাদেশের সমাজের বিপ্লবের স্তরসমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক মর্মবস্তুর দিক থেকে বাঙলাদেশে সমাজের বিপ্লবের শ্রেণীচরিত্র সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের মূল প্রশ্নরাষ্ট্রক্ষমতার প্রশ্ন, এক শ্রেণীর হাত থেকে অন্য একটি শ্রেণীর হাতে ক্ষমতার হস্তান্তরের প্রশ্ন



১৪ বাঙলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি (অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক) অত্যন্ত সংকটপূর্ণ বাঙলাদেশেরবর্তমান সংকটপ র্ণ পরিস্থিতি দেশের আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার ফলশ্রুতি বর্তমান পরিস্থিতির সংকট মূলতঃ দুইরকম যেমন বুর্জোয়াদের সংকট মেহনতী জনগণের সংকট

বাঙলাদেশে শাসক বুর্জোয়াদের সংকট নিম্নোক্ত বিষয়গুলিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত দেশে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা বেশীবেশী মুনাফা অর্জন করার জন্য দেশের মেহনতী জনগণের উপর শোষণ অব্যাহত রাখা দেশে সাম্রাজ্যবাদ ধর্মীয় মৌলবাদেরস্বার্থ রক্ষা করা তবে বাঙলাদেশের শাসক বুর্জোয়াদের সুনির্দিষ্ট সংকট ক্ষমতাসীন থাকা পুনরায় ক্ষমতাসীন হওয়ারবিষয়টিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত

বাঙলাদেশে মেহনতী জনগণের সংকট আরও গভীর বাঙলাদেশে প্রধানতঃ পুঁজিবাদী শোষণের কারণে এবং শাসক বুর্জোয়া, রাষ্ট্র সরকারের শোষণের কারণে খাদ্যদ্রব্য মূল্য, কাজ মজুরী, বিদ্যুৎ, পানি, বাসস্থান চিকিৎসা সমস্যায় মেহনতীজনগণের জীবন বিপর্যস্ত গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবী দাওয়ার সংগ্রামের উপরে মালিকপক্ষ সরকার পক্ষের পুলিশীদমন পীড়ন অব্যাহত জাতীয় সমপদ তেল গ্যাস কয়লা সমপদ আত্মসাত করার জন্য বহুজাতিক কোম্পানী এবং বাঙলাদেশেরশাসক বুর্জোয়া সরকার বিশেষতঃ বুর্জোয়া সরকারের আঁতাত ষড়যন্ত্র অব্যাহত

রাষ্ট্র সরকারের ছত্রছায়ায় সারাদেশে চাঁদাবাজী, দুর্ণীতি, নারী নির্যাতন সন্ত্রাস অব্যাহত অপরদিকে দেশে আইন শৃংখলাপ্রতিষ্ঠার নামে বিনা বিচারে সরকারি বাহিনী কর্তৃক শত শত মানুষ হত্যা অব্যাহত দরিদ্র অশিক্ষার কারণে এবং শাসকবুর্জোয়া সরকারের কমবেশী সহযোগিতায় সারাদেশে জঙ্গী উত্থান অব্যাহত

তবে বাঙলাদেশে মেহনতী জনগণের সুনির্দিষ্ট সংকট মেহনতী জনগণের আশু সমস্যাগুলি মূল সমস্যাগুলি নিয়ে সংগ্রাম গড়েতোলার জন্য দেশে শ্রমিকশ্রেণীর মেহনতী জনগণের শক্তিশালী রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা কমিউনিস্ট রাজনৈতিক নেতৃত্বেরউপস্থিতি নেই দেশে একটি সঠিক, ঐক্যবদ্ধ জাতীয় পর্যায়ে প্রভাবশালী কমিউনিস্ট পার্টির উপস্থিতি নেই

বাঙলাদেশে কমিউনিস্টদের কর্তব্য প্রথমত মেহনতী জনগণের আশু সমস্যাগুলি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তোলা একই সঙ্গেপাশাপাশি মেহনতী জনগণের মূল অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সমস্যাগুলি প্রধানতঃ রাজনৈতিক সমস্যানিয়ে সংগ্রাম সংগঠিত করা

বাঙলাদেশে কমিউনিস্টদের কর্তব্য পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ধর্মীয় মৌলবাদ বিরোধী গণতন্ত্র সমাজতন্ত্রের সংগ্রাম গড়েতোলা প্রধানতঃ পুঁজিবাদ বিরোধী সমাজতন্ত্রের সংগ্রাম সংগঠিত করা বাঙলাদেশে গণতন্ত্রের সংগ্রামকে সমাজতন্ত্রেরসংগ্রামের অধীনস্ত করা

বাঙলাদেশে কমিউনিস্টদের কর্তব্য বিদ্যমান বুর্জোয়া রাষ্ট্র সরকারের গুণগত বিপরীত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সরকারপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম গড়ে তোলা বিদ্যমান বুর্জোয়া সংবিধান সংসদের বিপরীতে গুণগত বিপরীত সমাজতান্ত্রিক সংবিধান সংসদ (সোভিয়েত) প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম সংগঠিত করা প্রধানতঃ বুর্জোয়া সরকারের গুণগত বিপরীত একটি সমাজতান্ত্রিকসরকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম গড়ে তোলা



১৫ সাধারণভাবে বর্তমান যুগ সাম্রাজ্যবাদের যুগ এবং সর্বহারা বিপ্লবের যুগ সুনির্দিষ্টভাবে বর্তমান যুগ পরোক্ষসাম্রাজ্যবাদের যুগ এবং কমিউনিস্ট আন্দোলনের বিপ্লবী পুনর্গঠনের যুগ

কমিউনিস্ট আন্দোলনের বিপ্লবী পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ার রয়েছে দুটি মূল বিষয় প্রথমটি বাঙলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলন বিশ্ব কমিউনিস্ট আন্দোলনের ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ মূল্যায়ন করা এবং এর সার সংকলন করা কমিউনিস্ট আন্দোলনের সফলতা ব্যর্থতাগুলিকে চিহ্নিত করা বিশেষতঃ কমিউনিস্ট আন্দোলনের তত্ত্বগত অগ্রগতি চিহ্নিত করা

দ্বিতীয়তঃ বাঙলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল বিষয়ক মৌলিক আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক তত্ত্ব গড়ে তোলা এবং সমাজতন্ত্র বিনির্মানবিষয়ক মৌলিক আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক তত্ত্ব গড়ে তোলা

আমাদের মতে প্রধানতঃ মার্কসবাদ-লেনিনবাদের তত্ত্বের ভিত্তিতে বাঙলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল বিষয়ক মৌলিকআর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক তত্ত্ব এবং সমাজতন্ত্র বিনির্মান বিষয়ক মৌলিক আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক তত্ত্ব গড়ে তোলা সম্ভবকারণ মার্কসবাদ-লেনিনবাদ কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রধান তত্ত্বগত ধারা নির্ধারক তত্ত্বগত ধারা মার্কসবাদ-লেনিনবাদবিশ্বজনীন কমিউনিস্ট ভাবাদর্শ মতবাদ মার্কস, এঙ্গেলস লেনিন বিশ্বজনীন কমিউনিস্ট তাত্তি্বক, নেতা সংগঠক

পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ধর্মীয় মৌলবাদের পতন অনিবার্য মার্কসবাদ-লেনিনবাদ সমাজতন্ত্র -কমিউনিজম এর বিজয়অনিবার্য

তারিখঃ ১৩.১১.২০০৯

1 টি মন্তব্য:

  1. porlam ebong bhalo laghlo...amra bicchinno bhabe oneke je chinta gulo korchi tar chomotkar ebong somonnito proyas ei lekha...vharot upomohadeshe communist/biplobi andoloner 100 bochor purti upolokkhe kichu onuthaner chinta kora hocche jar j...onno khubi sohaok hobe ei dhoroner likha...communist andoloner sob ghoranar lok ashe alochona somalochona korle ta thekei to beriya ashte pare agami diner cholar ekta common path...Bangladeshe to ekthi biplobi rajnythik shakthir utthan joruri hoye poreche-thik na?
    doya kore apnader contact details ta ektu janaben...tahole amader onuthaner jonno jogajog korte partam...khub bhalo laghlo ei blog...
    M A Palash

    উত্তরমুছুন